অগ্ন্যাশয়

একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - জীববিজ্ঞান - জীববিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্র | | NCTB BOOK

অগ্ন্যাশয়ঃ অবস্থান: অগ্ন্যাশয় পাকস্থলির নিচে অবস্থিত এবং উদর গহ্বরের ডিওডেনামের অর্ধবৃত্তাকার কুন্ডলীর ফাঁক থেকে প্লীহা পর্যন্ত বিস্তৃত।

গঠন: অগ্ন্যাশয় ১২-১৫ সেন্টিমিটার লম্বা ও ৫ সেন্টিমিটার চওড়া একটি মিশ্র গ্রন্থি (mixed gland)। এর চওড়া যে দিকটি ডিওডেনামের কুন্ডলির ফাঁকে থাকে তার নাম মাথা, যে অংশ সংকীর্ণ হয়ে প্লীহা পর্যন্ত বিস্তৃত সেটি লেজ এবং মাথা ও লেজের মাঝের অংশকে দেহ বলে। অগ্ন্যাশয়ের
গ্রন্থিগুলো থেকে ছোট ছোট নালিকা বেরিয়ে একত্রিত হয় এবং উইর্সাং নালি (duct of Wirsung) গঠন করে। এ নালি বাহুর দৈর্ঘ্য বরাবর এসে ডিওডেনামের কাছে অভিন্ন পিত্তনালির সাথে মিলিত হয়ে অ্যাম্পুলা অব ভ্যাটার(amula of vater)-এর মাধ্যমে ডিওডেনামে প্রবেশ করে। অগ্ন্যাশয়ের গ্রন্থিকোষগুলো ছোট ছোট নালিকার প্রান্তে আঙ্গুরের গোছার মতো সাজানো। এগুলোর বাইরে ক্ষুদ্র বহুভুজাকার কোষ একত্রিত হয়ে একেকটি আইলেটস অব ল্যাঙ্গারহ্যান্স গঠন করে। আইলেটস অব ল্যাঙ্গারহ্যান্স প্রায় ১০ লক্ষ কোষের একটি গুচ্ছ নিয়ে গঠিত এবং অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি হিসেবে কাজ করে। কোষগুলো চার ধরনের হয়: আলফা কোষ  গ্লুকাগন (glucagon) হরমোন ক্ষরণ করে যা রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বৃদ্ধি করে, বিটা কোষ ইনসুলিন (insulin) হরমোন ক্ষরণ করে যা রক্তের গ্লুকোজের পরিমাণ কমায়, ডেল্টা কোষ।  সোমাটোস্ট্যাটিন (somatostatin) হরমোন ক্ষরণ করে যা আলফা ও বিটা কোষের ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করে এবং  গামা কোষ  পলিপেপটাইড ক্ষরণ করে ।

পরিপাকে অগ্ন্যাশয়ের কাজ : খাদ্য পাকস্থলি থেকে ক্ষুদ্রান্ত্রে যাওয়ার সময় ক্ষারীয় তরলরূপী অগ্ন্যাশয় রস নিঃসৃত ২য় অগ্ন্যাশয়ের বহিঃক্ষরা অংশ থেকে দুধরনের ক্ষরণ মিলে অগ্ন্যাশয় রস গঠন করে

পরিপাক এনজাইম এবং একটি ক্ষারীয় তরল এ রসে যে ৩টি প্রধান এনজাইম থাকে তা হচ্ছে অ্যামাইলেজ, লাইপেজ ও প্রোটিয়েজ। আমাইলেজ স্টার্চকে ভেঙ্গে ক্ষুদ্রতর কার্বোহাইড্রেট ও চিনির অণুতে পরিণত করে। লাইপেজ পিত্তলবণের উপস্থিতিতে ফ্যাটকে ফ্যাটি এসিড ও গ্লিসারলে পরিণত করে। প্রোটিন বিশ্লেষকারী বিভিন্ন এনজাইম (প্রোটিয়েজ) পেপটাইড অণুকে ক্ষুদ্রতর পেপটাইডে পরিণত করে। দেহে অধিকাংশ প্রোটিন পরিপাক হয় অগ্ন্যাশয় রসের বিভিন্ন প্রোটিয়েজের মাধ্যমে। অগ্ন্যাশয়ের বহিঃক্ষরা অংশ যে সব প্রোটিয়েজ ক্ষরণ করে তার মধ্যে প্রধান দুটি হচ্ছে ট্রিপসিন ও কাইমোট্রিপসিন। এগুলো বড় প্রোটিন অণুকে ভেঙ্গে ক্ষুদ্রতর পেপটাইডে পরিণত করে (পেপটাইড থেকে অ্যামিনো এসিডে পরিণত হওয়ার বিষয়টি অন্যান্য পেপটাইডেজের ক্রিয়ায় ক্ষুদ্রান্ত্রে সংঘটিত হয়)।

অগ্ন্যাশয়ের বহিঃক্ষরা অংশ থেকে অগ্ন্যাশয় রসের অংশ হিসেবে ক্ষরিত হয় বাইকার্বনেট আয়ন। আংশিক পাচিত খাদ্য (অর্থাৎ কাইম) গ্যাস্ট্রিনের কর্মকান্ডে অতিমাত্রায় আত্মিক থাকে। বাহকাথনাটের প্রকৃতি ক্ষারীয় হওয়ায় অর্ধপাচিত খাদ্য নিরপেক্ষ হয়ে যায়। ফলে এ খাদ্য ক্ষুদ্রান্তে গেলেও আন্ত্রিক প্রাচীরের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। বাইকার্বনেট আয়ন ক্ষরিত হয় বহিঃক্ষরা অগ্ন্যাশয়ের নালিপ্রাচীরের কোষ থেকে । অগ্ন্যাশয় রস এভাবে অম্ল- ক্ষারের সাম্য, পাণিসাম্য, দেহতাপ প্রভৃতি নিয়ন্ত্রণ করে

Content added By

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

থাইরয়েড
পিটুইটারি
অ্যাড্রোনাল
অগ্নাশয়
নিউক্লিক এসিড
প্রোটিন
এমাইনো এসিড
গ্লুকোজ
Promotion